যেসব রহস্যের কোন কূলকিনারা নেই

প্রকাশঃ মার্চ ২, ২০১৭ সময়ঃ ১:০৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:২৫ অপরাহ্ণ

রহস্য মানুষকে টানে সেই অতীতকাল থেকেই। রহস্য মানুষকে ভয় পাইয়ে দেয়, তাক লাগিয়ে দেয়। এমনকি রহস্যময় ঘটনা শুনে মানুষ পাগল পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। আসুন জেনে নেই বিশ্ববিখ্যাত আটটি অমীমাংসিত রহস্য সম্পর্কে-

১। তাওস শহরের গুঞ্জন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের তাওস শহরে সবসময় একধরণের গুঞ্জন শোনা যায়। ঠিক যেন দিগন্ত থেকে একটা ডিজেলের ইঞ্জিন শহরের দিকে এগিয়ে আসছে। কিন্তু এই ভূতুড়ে শব্দ আসলে কোত্থেকে উৎপন্ন হয়, তার কূলকিনারা কেউ আজ পর্যন্ত করতে পারে নি। এই শব্দের ফলে শহরবাসীর অনিদ্রা, মাথাব্যথা, ঝিমুনি লেগেই থাকে। এমনকি কারো কারো নাক দিয়ে রক্ত পর্যন্ত বের হয়। তবে অধিবাসীরা জেই গুঞ্জনের কথা বলে থাকেন, অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যেও তা রেকর্ড করা সম্ভব হয় নি।

২। জ্যাক দ্য রিপার

১৮০০ সালের দিকে জ্যাক দ্য রিপার নামে পরিচিত সিরিয়াল কিলার ১১ জন পতিতাকে খুন করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট চ্যাপেল জেলার পূর্ব প্রান্তে সেই লাশগুলো ক্রমান্বয়ে খুঁজে পাওয়া যায়। শুধুমাত্র ভয়ংকর খুনিই ছিল না সে, মৃতদেহ থেকে নৃশংসভাবে দু একটা অঙ্গ কেতে নিয়ে যেত, খুনের স্মারক হিসেবে। পুলিশ আর গোয়েন্দারা তন্নতন্ন করে খুজেও তার টিকিটির পর্যন্ত দেখা পায়নি। ফলে মামলাগুলো ১৮৯২ সালে স্থগিত করে দেয়া হয়।

৩। বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল

আটলান্টিক মহাসাগরে মিয়ামি, পোর্টো রিকো এবং বারমুডার মাঝখানের বিস্তৃত এলাকাকে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল বলা হয়। বছরের পর বছর ধরে জাহাজের হারিয়ে যাওয়া, বিমানের অন্তর্ধান এবং ভিনগ্রহের গ্যাস বেলুনের কথা মানুষ শুনে আসছে। পৃথিবীর সবাই গল্পগুলো জানে, কিন্তু এগুলোর প্রকৃত কারণ কেউ আজ পর্যন্ত উদ্ঘাটন করতে পারে নি।

৪। আটলান্টিসের হারিয়ে যাওয়া নগরী

মৎস্যকন্যা আর জেলেদের শহর নেপচুন, হারিয়ে যাওয়া শহর আটলান্টিসের সবচেয়ে বিখ্যাত অংশ। সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গ্রিক দার্শনিক প্লেটো তার দুইটি ভাষণে এই নগরীর অস্তিত্বের কথা বলে গেছেন। তারপর থেকে বহু অভিযান, বহু অনুসন্ধানের পরেও কেউ পৌছতে পারল না সেখানে। অনেকে বলেন, জাঁকজমকপূর্ণ এই নগরী সমুদ্রের অতল গহ্বরে তলিয়ে গেছে। আবার অনেকে প্রশ্ন তোলেন আদৌ আটলান্টিস বলে কিছু কি ছিল?

৫। ছুপাকেবরা

লাতিন আমেরিকানরা বিশ্বাস করে, পোর্টো রিকোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গোপনে এক ভয়ংকর দানব লালনপালন করে। এই দানবের নাম দিয়েছে তারা ছুপাকেবরা। এটি ইঁদুর, বিরাল, কুকুর এবং মুরগির মাংস খেয়ে বেঁচে থাকে। কেউ কেউ বলেন, এই দানব ৫ ফুট লম্বা এবং তার চোখ ভয়ংকর রকমের লাল। দানবটি খাবারের সন্ধানে টেক্সাস বা নিউ মেক্সিকোতে মাঝে মাঝেই চলে আসে বলে স্থানীয়দের দাবী।

৬। দ্য জার্সি ডেভিল

একশো বছর আগে জার্সি ডেভিলের গল্প বেশ জনপ্রিয় ছিল, এখন অবশ্য খুব একটা শোনা যায় না। দেখতে এটি ক্যাঙ্গারুর মতন, তবে দুটি পাখা আছে এটির। ১৯০৯ সালের পত্রপত্রিকায় এটিকে দেখা গেছে শিরোনামে অনেক খবর ছাপা হয়। ফলে আমেরিকার অনেক মানুষ আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ে। স্কুল কলেজ বন্ধ হয়ে যায়। অনেক পুলিশ এবং অগ্নিনির্বাপক কর্মী এটিকে দেখেছে বলে বিবৃতি দেয়। তখন অনেকেই ধারণা করে, এটি মুখ দিয়ে আগুন ছুড়তে পারে।

৭। ভয়ংকর বামন

২০০৮ সালে একদল লোক মাছ ধরতে গেলে এই বর্বর বামনের সাক্ষাত পায় বলে দাবী করে। তারা ক্যামেরা দিয়ে নিজেদের ছবি তুলছিল। তখন পাশের ঝোপে গা ছমছমে আওয়াজ হলে তাকিয়ে দেখে একটি ভয়ংকর বামন। এই বামনটির ভয়ে তারা এলাকা ছেড়ে শহরে চলে আসে এবং পত্রিকা ও টিভিতে এটির সম্পর্কে বলে। তারপরে এই গল্প সারা আমেরিকায় চাউর হয়ে যায়। অনেকেই বাচ্চাদের ঘুম পারানর জন্য ভয়ংকর বামনের গল্প বলতো তখন।

৮। ছুপাস

ব্রাজিলের পূর্বাঞ্চলে রয়েছে গহীন অরণ্য। সেই দুর্গম অরণ্যে বাস করে আদিবাসীরা। তাদের মতে ধাতুর তৈরি ডিস্কের মতো বস্তু ‘ছুপাস’ প্রতিরাতে ওই জঙ্গলের উপর দিয়ে উড়ে যায়। এগুলো আকারে খুব ছোট এবং তীক্ষ্ণ শব্দ করতে সক্ষম। আদিবাসীদের মধ্যে যারা রাতের বেলা সিকারে বের হয় এই ছুপাস তাদেরকে প্রায়ই আক্রমন করে। খুবই উজ্জ্বল একটা আলোকরশ্মি আদিবাসীদের দিকে ছুঁড়ে দেয় তারা। ফলে চামড়া পুড়ে যায়, এবং অসহ্য ব্যথা অনুভূত হয়। কেউ কেউ বলেন, ছুপাসের আক্রমণে অনেক আদিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খোলে না।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/নাহসু     

  

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G